নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে এক অস্থির পরিস্থিতি। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারবিরোধী ঐক্য প্রক্রিয়ার একটি দৃশ্যমান পটভূমি তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের সুযোগ রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশের উদ্যোগ নেয় বাম দলগুলো। অথচ এই বাম দলগুলোর সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্পর্ক সবসময়ই ভালো ছিল। এছাড়া বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। এমনকি যুক্তফ্রন্ট সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী গতকাল শনিবার সরকারকে হুমকির সুরে বলেছেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না। এসব ঘটনায় রাজনীতিতে একটা অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে।
এত কিছুর পরও আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা উদাসীন ভাব বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন-হুঙ্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। নির্বাচনসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে বিরোধীদের উত্তরে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে একমাত্র ওবায়দুল কাদের ও তোফায়েল আহমেদই কথা বলছেন। অন্য নেতাদের তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বেশ আত্মবিশ্বাসী যে নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগই জয়লাভ করবে। এই কারণেই আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা অতি আত্মবিশ্বাসী ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যতবার আওয়ামী লীগ অতি আত্মবিশ্বাসী হয়েছে ততবারই দলটি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
সর্বপ্রথম পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে অতি আত্মবিশ্বাসের মূল্য দেয় আওয়ামী লীগ। ১৫ আগস্টের আগে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা বঙ্গবন্ধুকে সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য অভ্যুত্থান বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজের প্রতি বাঙালির ভালোবাসার বিষয়ে অতি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারে একথা বিশ্বাসই করতেন না তিনি। এই আত্মবিশ্বাসই কাল হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য।
পরবর্তী ১৯৯১ সালের নির্বাচনেও অতি আত্মবিশ্বাসের জন্য ভরাডুবি ঘটে আওয়ামী লীগের। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতনের পর অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, তারা মন্ত্রিপরিষদও ঠিক করে ফেলেছিল। সে সময় এরশাদ সরকারের আমলে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এম. কে. আনোয়ার ও কেরামত আলী আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদেরকে দলে নেয়নি অতি আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ। এরপর তাঁরা বিএনপিতে যোগ দেন আর নির্বাচনে জয়লাভ করে বিএনপি।
২০০১ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ অতি আত্মবিশ্বাস দেখায়। সে বছর বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। আসলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত নিজেদের মেয়াদে অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারেও অতি আত্মবিশ্বাসী ছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার লতিফুর রহমান সহ নির্বাচন কমিশনের অনেকেই আওয়ামী লীগ বিরোধী ছিলেন। তাঁরা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করবে বলে সতর্কও করে দিয়েছিল দলটির শুভাকাঙ্ক্ষীরা। কিন্তু অতীতের মতো এবারও আওয়ামী লীগ বিষয়টিকে আমলে নেয়নি। ফলস্বরূপ নজিরবিহীন কারচুপির নির্বাচনে পরাজয় ঘটলো আওয়ামী লীগের। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪১ শতাংশ ভোট পেল ঠিকই কিন্তু জাতীয় সংসদে সিট পেল মাত্র ৬২টি।
আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে অতীতের সেই পুরনো অহমিকা, পুরনো আত্মতুষ্টি আর অতি আত্মবিশ্বাস আবারও দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যেন নিশ্চিত যে তাঁরা আবার ক্ষমতায় আসবেন। কিন্তু আত্মবিশ্বাস ভালো হলেও যেকোনো বিষয়ে অতি আত্মবিশ্বাস খুবই ভয়াবহ প্রবণতা। ২০০১ এর ১৩ জুলাই ক্ষমতা ছাড়ার সময় আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী নিজেদের দপ্তরে কোটটাও রেখে এসেছিল কারণ তাঁরা বিশ্বাস করতো কিছুদিনের মধ্যেই দপ্তরে ফেরত আসতে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু নির্বাচনে হেরে গিয়ে দপ্তরে আর ফেরত আসা হয়নি সেই অতি আত্মবিশ্বাসী মন্ত্রীদের।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। কিন্তু তারপরও দলটি মাঝে মধ্যে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। তবে দলটি কিন্তু কখনো প্রতিপক্ষ বা দ্বিতীয়, তৃতীয় শক্তির কারণে বিপর্যয়ে পড়ে না। ইতিহাস সাক্ষী দেয়, অতি আত্মবিশ্বাস আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলই বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের বিপর্যয়ের কারণ। অতি আত্মবিশ্বাস থেকে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের উদাসীনতা সৃষ্টি হয়, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে যা আবার দেখা যাচ্ছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কারও মধ্যে কাজ করার কোনো আগ্রহ নেই, নেই কোনো উদ্দীপনা। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনগুলোতেও একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া আর কারও তেমন কোনো তৎপরতা কিংবা উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। অথচ দরজায় কড়া নাড়ছে নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনের সময়টাতে দেশের রাজনীতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে আওয়ামী লীগ কি আরেকটি সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে?
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে এখন টালমাটাল অবস্থা
বিরাজ করছে। উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছে সেই তালিকা তৈরি করে ৭৩ জনকে ইতিমধ্যে
বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে
বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যারা সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর এই ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ঢালাওভাবে নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপিতে
বহিষ্কার অবশ্য এটাই প্রথম নয় এর আগেও যে সমস্ত নেতা-কর্মীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করেছিল বিশেষ করে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদেরকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল।
তবে তাদের বেশির ভাগকেই দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সাধারণ ক্ষমতার আওতায় এ সমস্ত স্থানীয়
পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আবার বিএনপির জন্য কাজ করছেন।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, উপজেলা
নির্বাচনে যাদেরকে বহিষ্কার করা হলো তাদের ভবিষ্যত কি? তারা কি শেষ পর্যন্ত বিএনপি
থেকে বহিষ্কারই থাকবেন নাকি বিএনপি তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনবে?
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল
সূত্র বলছে, এ ব্যাপারে বিএনপি কৌশলী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। উপজেলা নির্বাচনে যেসমস্ত
নেতাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, যারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ
করছে তাদের নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।
বিএনপির একজন সদস্য বলেছেন,
আমরা যেহেতু দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যাবে না। কাজেই
যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেই হবে। তবে তার মধ্যে যদি
ভবিষ্যতে এ সমস্ত নেতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং শাস্তি প্রত্যাহারের বিষয়ে আবেদন
করেন তাহলে সেটি দলের হাই কমান্ড বিবেচনা করতে পারে। এর আগেও বিএনপিতে ৩ শতাধিক নেতাকে
বহিষ্কার করা হয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। এর মধ্যে বেশীর ভাগই
আবার বিএনপিতে ফিরে এসেছেন বলে বিএনপির এই স্থায়ী সদস্য জানান। তিনি বলেন, যারা ক্ষমা
করেছেন এবং যারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ড করবে না বলে অঙ্গীকার করছে তাদেরকে দল
ফিরিয়ে নিয়েছে। দলের শৃঙ্খলার স্বার্থে এটা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাচনেও একইরকম
ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সূত্রে জানা গেছে। যারা উপজেলা
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং যারা বিজয়ী হবেন তারা স্থানীয় পর্যায়ে আবার দলের জন্য
কাজ করবেন বলে ধারণা করা হয়েছে। তবে সর্বক্ষেত্রেই এটি হবে না বলে মনে করেন অনেকেই।
বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, কথায় কথায় বিএনপিতে বহিষ্কার এটি রাজনৈতিক দলের জন্য
সুষ্টু চর্চা নয়। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দলে বহিষ্কারের নানারকম প্রক্রিয়া
থাকে। একজন নেতাকে বা একজন কর্মীকে বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি
অনুসরণ করতে হয়। তার দাবী এসব কিছুই এখন অনুসরণ করা হচ্ছে না। শুধুমাত্র বহিষ্কারাদেশের
একটি চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন তারা নির্বাচন করলেন বা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কি
ইত্যাদি জানিয়ে তাদেরকে কোন ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ও প্রদান করা হচ্ছে না।
এসমস্ত কারনেই বিএনপিতে এখন
এক ধরনের অসন্তোষ এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে বিএনপির নেতারা কিছু না বললেও তৃণমূলের
নেতারা বলেছেন, বহিষ্কার আতঙ্ক বিএনপিকে আরো নিষ্ক্রিয় এবং হতাশাগ্রস্থ করবে।
বহিষ্কার বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের
স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল
কাদের এনিয়ে একাধিকবার বক্তব্য রেখেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, যদি মন্ত্রী-এমপিরা
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগামী ৩০ শে এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির
বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হসিনা। এই বৈঠকে দলের সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতারা
বলছেন, নানা বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ এখনই মন্ত্রী এমপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে
না। কোন মন্ত্রী-এমপিকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের জন্য বহিষ্কার করা হবে না বলেও আওয়ামী
লীগের বিভিন্ন নেতারা মনে করছেন। তারা বলছেন, বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি মনে রাখবেন,
ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, ঢালাও বহিষ্কার বা একটি সিদ্ধান্ত
লঙ্ঘন করলেই তাকে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বের করে দেওয়ার নীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস
করে না। আওয়ামী লীগ এক্ষেত্রে সংযত ও গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখার নীতি
অনুসরণ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদকরা তাদের বিভাগ অনুযায়ী প্রতিবেদন দিবেন। কোন কোন বিভাগে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা
নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এবং কোন প্রেক্ষাপটে তারা প্রার্থী হয়েছেন সে বিষয়টিও সাংগঠনিক
সম্পাদকদের রিপোর্টে উপস্থাপিত হবে। এরপর যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ
গ্রহণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ‘কারন দর্শানো নোটিশ’ জারি করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এরপর ‘কারন দর্শানোর নোটিশ’এর জবাবের প্রেক্ষাপটে তাদেরকে সতর্ক
করা বা স্বজনদেরকে পদ-পদবী থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। আওয়ামী লীগের
একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন না।
তিনি সিদ্ধান্ত নেন ধীর স্থীর ভাবে। আর একারণেই দীর্ঘ মেয়াদী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে
পরবেন এমপি-মন্ত্রীরা।
যেসমস্ত এমপি-মন্ত্রীরা দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন পরবর্তীতে
দলীয় কমিটিগুলোতে তাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যাবে। অনেকে কমিটি থেকে বাদ পড়বেন। যেসমস্ত
মন্ত্রীরা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, ভবিষ্যতে তারা আওয়ামী
লীগ সভাপতির আস্থাভাজনের তালিকা থেকে বাদ যাবেন। অনেক এমপি হয়তো পরবর্তী নির্বাচনে
মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন।
তবে যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তারা শেখ হাসিনার সু-নজর
থেকে সরে গেলেন। আওয়ামী লীগে এদের ভবিষ্যৎ ধূসর এবং কুয়াসাচ্ছন্ন হয়ে গেল। আওয়ামী লীগ
সভাপতি বহিষ্কার করেন খুব কম। তবে দলের রেখে তাদের এমনভাবে গুরুত্বহীন করে ফেলা হয়
যে শাস্তি বহিষ্কারের চেয়ে অনেক বেশী। আর এই কৌশলটি অধিকতর কার্যকর বলে আওয়ামী লীগের
নেতা-কর্মীরা মনে করে। তাই ৩০ এপ্রিল বৈঠকে আওয়ামী লীগ দলের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে
যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে হুলুস্থুল কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা
হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপির সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অটুট রাখতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে দলটির
হাইকমান্ড। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায়
দল ও অঙ্গসংগঠন থেকে নতুন করে আরও তিনজনকে শুক্রবার বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র
যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলার হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির
সদস্য আব্দুল হামিদ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করছেন। শেরপুরের শ্রীবর্দী
উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম মোস্তফা (সোনাহার)। তিনি ২নং পৌর ওয়ার্ড বিএনপির
সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অপর একজন হলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা
বিএনপির উপদেষ্টা মংসুইউ চৌধুরী। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
বিএনপি বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপিতে এখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছে সেই তালিকা তৈরি করে ৭৩ জনকে ইতিমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যারা সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর এই ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ঢালাওভাবে নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপিতে বহিষ্কার অবশ্য এটাই প্রথম নয় এর আগেও যে সমস্ত নেতা-কর্মীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল বিশেষ করে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদেরকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে তাদের বেশির ভাগকেই দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সাধারণ ক্ষমতার আওতায় এ সমস্ত স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আবার বিএনপির জন্য কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এনিয়ে একাধিকবার বক্তব্য রেখেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, যদি মন্ত্রী-এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।