নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০১৯
বিএনপিকে সরকারের অনুগত চায় আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুগত। মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো মৌলিক জাতীয় প্রশ্নে তাদের মতপার্থক্য কমে এসেছে। ১৯৮২ সাল থেকে ৯০ পর্যন্ত নয় বছর ক্ষমতায় ছিলেন এরশাদ। সে সময় এরশাদ না ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করেছিলেন, না জাতির পিতাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এরশাদ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের পদোন্নতি দিয়েছিলেন। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দিয়েছিলেন। ‘ফ্রিডম পার্টি’ নামে একটি রাজনৈতিক দলও খুলেছিল আত্মস্বীকৃত খুনীরা। ঐ রাজনৈতিক দলটি এরশাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছিল। কিন্তু সময়ের আবর্তে সব বদলে গেছে। জাতীয় পার্টি এখন আওয়ামী লীগের গৃহপালিত দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কেবল মহাজোট করেনি দলটি, বরং আওয়ামী লীগের কথার বাইরে যাবার জো নেই জাতীয় পার্টির। জাতীয় পার্টির অনেক অভ্যন্তরীন বিরোধ মেটান আওয়ামী লীগ সভাপতি। জাতীয় পার্টির নেতারা এখন যারপরনাই বঙ্গবন্ধুভক্ত। জাপা ঘপ্টা করে জাতীয় শোক দিবস, জাতির পিতার জন্মদিন পালন করে। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে জাপা নেতারা মুখে ফেনা তোলেন। কদিন আগেও এমনটা ছিল না। আওয়ামী লীগ বিএনপির মধ্যেও এই রুপান্তর চায়। আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপি জাপার মতো পরিবর্তিত হোক। আদর্শগত দিক থেকে বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি একই ঘরানার। দুটি দলই স্বাধীনতা বিরোধীদের পৃষ্টপোষকতা দিয়েছিল। কিন্তু জেল আতংকেই এরশাদের পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগের ধারণা, বিএনপিরও এরকম পরিবর্তন হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মৌলিক জাতীয় প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ঐক্যমত চায়।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন,‘ রাজনীতিতে ভিন্নমত থাকতেই পারে। ভিন্ন কর্মসূচীও থাকতে হবে। কিন্তু মৌলিক জাতীয় প্রশ্নে আমাদের একমত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার দেওয়া যায় না।’ তিনি বলেন ,‘জাতির পিতা, দেশের স্বার্থ এবং উন্নয়ন এসব প্রশ্নে ছাড় দেওয়া যায় না। আমরা যে রাজনীতি করি না কেন, তাদের এসব প্রশ্নে একমত হতে হবে।’ হানিফ বলেন,‘ কেউ যদি জাতির পিতাকে স্বীকৃতি না দেয়, তাহলে তো ঐ দল বাংলাদেশের অস্তীত্বকেই অস্বীকার করলো। সেক্ষেত্রে কি তার রাজনীতি করার অধিকার থাকে?’ বেগম খালেদার মুক্তি এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, তাদের সভা সমাবেশ করার অধিকার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন,‘ বিএনপিকে তো আগে সুষ্টু ধারায় ফিরতে হবে। স্বাধীরতা বিরোধীদের সঙ্গে বসবাস করে কিভাবে তারা গণতান্ত্রিক রাজনীতি করতে চায়?’ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মনোভাব স্পষ্ট। বিএনপিকে বদলে যেতে হবে। বদলে যাওয়া মনে হলো স্বাধীনতা বিরোধীদের পরিত্যাগ করতে হবে, জাতির পিতাকে স্বীকৃতি দিতে হবে। ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করতে হবে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন,‘এমনিতেই বিএনপির অস্তীত্ব বিপন্ন। এই অবস্থা কাটাতে তারা জাতীয় পার্টির মতো পন্থা অবলম্বন করতে পারে। তারা তাদের নীতি এবং আদর্শ পাল্টে মূলধারার রাজনীতিতে আসতে পারে। না হলে তাদের অস্তীত্ব বিলীন হয়ে যাবে। অবশ্য বিএনপিকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। বিএনপির ৫ সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদে এসব ব্যাপারে পরিবর্তিত রুপেই আবির্ভূত হবেন বলেই জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।