নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫১ এএম, ২৬ জুন, ২০১৯
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপির) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এর ডাকা সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আচমকা অলির এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করাকে বেশ সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি। কারণ অলি আহমদ সম্প্রতি ভারত সফর করে এসেছেন। দেশে ফিরেই তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কট্টর সমালোচনায় মেতে উঠেন। যদিও এলডিপির পক্ষ থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে অলির এ সংবাদ সম্মেলনে কোন দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা বিএনপি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে। লন্ডনে পলাতক থাকা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দলের সিনিয়র নেতাদের সর্তক করেছেন সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে।
একটি সূত্র জানায়, বিএনপির হাইকমান্ডের নেতৃত্বের ব্যর্থতার অভিযোগটি হয়তোবা সংবাদ সম্মেলন তুলে ধরা হতে পারে। সম্প্রতি অলি আহমদ এর সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদুতও সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। ভারত সফর এবং চীনের রাষ্ট্রদুতের সৌজন্য সাক্ষাত এসব বিষয়ে বিএনপির সন্দেহ আরো বেশি ঘনীভূত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ২০ দলীয় জোটের দলগুলো যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং জাতীয় ইস্যুতে আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্য তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলন। তার মতে, এতে কোন দুরভিসন্ধি নেই। তিনি আরও জানান, বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করার জন্য এ পদক্ষেপটা নিয়েছি। আমরা তো ২০ দলে আছি।
বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে চারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে চলমান রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এলডিপির পক্ষ থেকে এর আগেও সংবাদ সম্মেলন করেছি। যেখানে সবাইকে ডাকা হয়েছিল।
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অলি আহমদ সম্প্রতি গণমাধ্যমে সরকারবিরোধী চলমান রাজনীতি নিয়ে নিজের বিরক্তির কথা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া কারাগারে থেকে দলের নেতৃত্ব দিতে পারছেন না এবং তারেক রহমানেরও লন্ডন থেকে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব নয়।’ বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘হয় আপনারা (বিএনপি) সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিন, না হয় আমাদের নেতৃত্ব দিতে দিন। আমি নিজে নেতৃত্ব গ্রহণে প্রস্তুত।’
সূত্র জানায়, আগামীকালের সংবাদ সম্মেলনে এলডিপির পক্ষ থেকে জোট শরিকদের অনেক নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এমনকি বিএনপিরও কয়েকজন সিনিয়র নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও এলডিপির পক্ষ থেকে ওই সংবাদ সম্মেলনকে বিকল্প জাতীয়তাবাদী জোট গঠনের প্রক্রিয়া হিসেবে স্বীকার করা হচ্ছে না। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশে মধ্যবর্তী গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের দাবিসহ চলমান রাজনৈতিক ইস্যুতে তাদের এ সংবাদ সম্মেলন। এলডিপির পক্ষ থেকে জোট শরিকদের অনেক শীর্ষ নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। অলি আহমদ ও এলডিপির পক্ষে দলটির একজন যুগ্ম মহাসচিব তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
ইতিমধ্যে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশদলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, মরহুম শফিউল আলম প্রধানের দল জাগপার সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদসহ আরও বেশ কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনসহ আরও কয়েক নেতাকেও এলডিপির সংবাদ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/ডব্লিউএম
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।