সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডায় ঢুকতে পারেননি, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ঢুকতে পারেননি। গতকাল বিকেলে তিনি বাংলাদেশে এসে এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান গ্রহণ করছেন। কারো সাথেই তিনি যোগাযোগ করছেন না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। অনেকটাই হতাশ এবং মুষড়ে পড়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেবে না সরকার। ইতিমধ্যে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য নন। আর এ কারণেই ডা. মুরাদের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। তবে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ডা. মুরাদ হাসানের সদস্যপদ খারিজ হওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত লাগবে এবং এই সিদ্ধান্তের কপি স্পিকার বরাবর প্রেরণ করতে হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ মহান বিজয়ের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত। আগামী ২৩, ২৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপ সফরে যাবেন। কাজেই চট জলদি করে মুরাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে না বলেই অনেকে মনে করছে। তাছাড়া মুরাদের বিরুদ্ধে যে বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা করছেন সেই মামলাকেও সরকার উৎসাহিত করতে চায় না। বরং সরকার মনে করে, মুরাদ একটি সাক্ষাৎকারে যে বক্তব্য দিয়েছে সেই বক্তব্য অনভিপ্রেত ও অনুচিত। কিন্তু বিএনপি এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এর চেয়ে নোংরা, কুৎসিত এবং অসভ্য বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধুমাত্র মুরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নীতিতে সরকারের সায় নেই বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরকারের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন যে, মুরাদ যে শাস্তি পাবার তা পেয়েছে। মুরাদকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি একটি নজির এবং এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না।
কিন্তু মুরাদের যখন মন্ত্রীত্ব চলে গেল সেই সময়ে মোয়াজ্জেম হোসেন আলালেরও কুরুচিপূর্ণ নোংরা বক্তব্য বেরিয়েছিল। কিন্তু আলালের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিএনপি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাছাড়া বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক নোংরা, কুৎসিত অপপ্রচার করছে বিএনপি-জামাতপন্থী একটি গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিএনপি-জামাতপন্থীরা। আর সেকারণেই সরকার মনে করছে যে, একতরফাভাবে শুধু আওয়ামী লীগ যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে সেটি একটি ভুল বার্তা সৃষ্টি করবে। এ কারণেই ডা. মুরাদের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে সরকার। আপাতত মুরাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। একইভাবে গাজীপুরের সদ্য বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রলম্বিত হতে পারে। বরং সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছে জাহাঙ্গীর আলমও যা শাস্তি পাওয়ার পেয়েছেন। তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আপাতত তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। মুরাদ এবং জাহাঙ্গীর দুজনেই আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষনে থাকবেন। তাদের প্রাথমিক শাস্তি হয়ে গেছে বলে আওয়ামী লীগ মনে করে। ভবিষ্যতে তারা কি করে সেটার উপর নির্ভর করবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।