ইনসাইড বাংলাদেশ

সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুড়িগ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা


Thumbnail সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুড়িগ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে রাতভর বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায়, দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমের আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষক। 

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগাম জাতের কিছু ধান পাকতে শুরু করেছে, বাকি ধানের সবে মাত্র শীষ বেড় হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গত ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া অব্যাহত থাকায়, কৃষকের অতি কষ্টের ফসল বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় মাটির সাথে নুয়ে পড়েছে। 

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের রাহিজুল ইসলাম গনি জানান, বৃষ্টি আর বাতাসে তার দেড় বিঘা জমির ধান মাটির সাথে শুয়ে পড়েছে। ধানের সবে মাত্র শীষ বের হয়েছে। জানিনা ফসল ঘরে তুলতে পারবো কিনা! 

পাইকেরছড়া ইউনিয়নের আব্দুল হালিম জানান, প্রায় সোয়া বিঘা জমির ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। ধানের শীষ পচনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কয়েক গোছা একত্র করে বেঁধে সোজা করে দিচ্ছি। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা ছাড়িয়ে কৃষক ১৬ হাজার ৮৫৩ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ জানান, বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় আমন ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ২২ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ক্ষতি কমাতে ক্ষেতের আইল কেটে পানি বের করে দেয়া ও গোছা করে ধান বেঁধে দেয়াসহ
কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে, জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় গত ২ দিনের টানা বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি খেতের। শতশত কৃষকের স্বপ্নের আমন খেতের ফসল বর্তমানে কাদাপানিতে লেপ্টে আছে। চলতি রোপা আমন চাষের শুরু থেকে প্রকৃতির সাথে লড়াই চলছে ফুলবাড়ীর কৃষকদের। আমনের চারা রোপণের পরে খরার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অনেক ক্ষেতে দেখা দেয় পোকার আক্রমণ। 

ফুলবাড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তৎপরতা আর কৃষকদের হার না মানা লড়াইয়ে জয় কৃষকের। দিগন্তজুড়ে খেলা করে সবুজের ঢেউ। কৃষাণ-কৃষাণীরা আশায় বুক বাঁধেন। স্বপ্ন দেখেন ফসল ঘরে তুলে নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠার। তবে তাদের আশার পাতে ছাঁই। তাদের স্বপ্নের আমন খেতের ধান গাছ এখন মাটির সাথে লেপ্টে আছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত কৃষকের পাকা, আধাপাকা, কাঁচা ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বৃষ্টি আর বাতাসের তোড়ে নষ্ট হয়ে গেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, লাউসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি ক্ষেত। 

বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, তার সাড়ে তিন বিঘা জমির সদ্য শীষ বের হওয়া স্বর্ণ জাতের ধানের গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। 

সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষক বাদল সরকার জানান, তার নিজের তিন বিঘাসহ তার ভাই ও চাচির পাঁচ বিঘা জমির ধান গাছ এলোমেলো ভাবে জমির কাদাপানিতে লেপ্টে আছে। এতে জমির ধান পঁচে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। 

ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের খোঁচাবাড়ী গ্রামের শামসুল হক জানান, তিনি এবারে দশ বিঘা জমিতে আমন চারা রোপন করেছেন। তার মধ্য প্রায় আড়াই  বিঘা জমির ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এতে ফলন হানির পাশাপাশি গো-খাদ্যে সংকটের সম্ভাবনার কথাও বলেন তিনি। একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক।

আউশ ও রোপা আমন ধান চাষাবাদের বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবারে ১১ হাজার ৩৫২ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এছাড়াও ১ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আউশ চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বন্যায় ৫১০ হেক্টর জমির আউশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সবশেষ বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে ৩৬৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে যেসকল খেতের ধান গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে সেসব ধান খেতের পানি দ্রুত নিস্কাসনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি জমিতে লুটিয়ে পড়া ধান গাছগুলিকে মুটো করে বেঁধে দেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যেসব খেতের ধান আশি ভাগ পেকেছে তা কেটে নেয়ার জন্যও কৃষকদের বলা হচ্ছে। জমিতে ধানগাছ লুটিয়ে পড়ায় ফলনহানির কোন সম্ভাবনা আপাতত দেখছি না।  

সিত্রাং   কুড়িগ্রাম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে না সরকার

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কয়েকজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ এবং তৎপর। একের পর এক বিভিন্ন মার্কিন কূটনীতিক এবং প্রতিনিধিরা ঢাকায় আসছেন। তারা সরকার এবং বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ক্রমশ প্রকাশ্য হচ্ছে। তবে এ সমস্ত চাপ এবং হুমকি স্বস্তেও বাংলাদেশ সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবে না। 

সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ ইরান বা উত্তর কোরিয়া হবে না। বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার পথেও হাটবে না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব পথেই চলবে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেকগুলো বাণিজ্যিক ব্যাপার রয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দু দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক যেন কোনো অবস্থাতেই ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে সরকার সজাগ রয়েছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশ অন্যান্য দেশগুলোর মত সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধীতা করবে না। চীন-রাশিয়া বলয়েও প্রবেশ করবে না। বাংলাদেশ তার মৌলিক পররাষ্ট্রনীতি, 'সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়' এই নীতি নিয়েই অগ্রসর হবে।

বাংলাদেশ সরকার যেমন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ আলোচনা এবং সমঝোতার পথও খোলা রাখবে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, মাঠের রাজনীতিতে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করা হবে এবং এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা সরকার বা নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না এমন বক্তব্য দিয়ে কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করা হবে। ঠিক তেমনিভাবে সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক এবং ব্যক্তিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাজ অব্যাহত রাখবে।

জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন যে আলাপ আলোচনা এবং সংলাপ সেগুলো অব্যাহত রাখবে। এর পাশাপাশি সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে তাদের মধ্যে অন্যতম রয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আরও কয়েকজন। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে কাজ করবেন।

এছাড়াও ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গেও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা যারা যোগাযোগ করতেন তারা যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদকের বাইরে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং মোহাম্মদ আলী আরাফাত মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখবেন।

সরকার একটি মধ্য অবস্থা চাচ্ছে। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক কঠোর অবস্থানে না যায়। সরকারের কৌশল হলো এরকম একটি সমঝোতামূলক পরিবেশের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করা এবং নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে সমঝোতার চেষ্টা করা।

ড. ইউনূসের বিষয়টি নিয়েও সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকারের কেউ কেউ ইউনূসের মামলার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করার পক্ষে। তবে সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ যেন মার্কিন বিরোধী একটি রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত না হয়, সেটির ব্যাপারে সজাগ সরকার। কারণ, এরকম একটি অবস্থানে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দেয় সেটির ধাক্কা বাংলাদেশ সামাল দিতে পারবে না। তাই, নরমে গরমে সম্পর্কের ধারা এগিয়ে নেয়াই হচ্ছে সরকারের কৌশল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ভিসা নীতি   সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রভাব খাটিয়ে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট বন্ধ, নেপথ্যে মন্ত্রীর ছেলে

প্রকাশ: ০৯:০৭ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

একজন ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের ভবন এবং প্রতিষ্ঠান দখল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবহার করে এই কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তারা। 

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের। এর নেপথ্যে একজন মন্ত্রীর ছেলের   হাত আছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, ‘প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবহার করে একটি কুচক্রী মহল বেআইনিভাবে বন্ধ করে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে আইন আদালতকে তোয়াক্কা করা হয়নি, শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক তা করা হয়েছে। আমাদের এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও ভবনটি দখল করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।’

এই প্রতিষ্ঠানে অভিযান ও তালা দেওয়ার নেপথ্যে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের মনে হয় এখানে একজন মন্ত্রীর ছেলের হাত আছে। উনি আমাদের ম্যানেজারকে বলেছিলেন, তিনি প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কিনে নিতে চান। তখন আমাদের ম্যানেজার তাকে বলেছিলেন—আপনার তো টাকা আছে আপনাকে এটা কিনে নিতে হবে কেন? তখন মন্ত্রীর ছেলে বলেছেন, যদি বাড়ি ছেড়ে না দেন, তাহলে আঙুলটা বাঁকা করতে হবে।’

এ সময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিযানের দিন আসা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ দেখাতে পারেনি। শুধু বলছে, আপনারা দ্রুত মালামাল সরিয়ে নেন। এর জন্য কোনও কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। তারা আমাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে, কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে, কিন্তু আমরা কবে মালামাল সরিয়ে নেবো তাতো বলতে পারে না।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমরা জানতে পেরেছি, প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। মন্ত্রীর ছেলের ঘনিষ্ঠ ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান তা ক্রয় করেছে। অথচ এই সম্পত্তির দাম ৪৫ কোটি টাকার বেশি হবে। ফলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আরেকটি কথা, নামমাত্র মূল্যে এই সম্পত্তি কিনে নিলেও তারা আমাদের বাড়ি ছাড়ার কোনও নোটিশ দেয়নি। বরং তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।’

খন্দকার আবুল খায়ের জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে এখন প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত। এছাড়া ৫০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত চেম্বার করে উন্নত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের গত ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি পরিদর্শন দল সেখানে যান। এরপর ১৮ মে তারিখ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে চিঠি পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কোনও প্রকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তারা স্বাস্থ্য অধিদফতরে আপিল করলে তা অগ্রাহ্য করে ৭ জুন তাদের চিঠি দেয়। নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। পরে তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার তালা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। চলমান অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে গত বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) এটি বন্ধ করা হয়। তবে অভিযানের সময় মালিকপক্ষের অভিযোগ ছিল— স্বাস্থ্য অধিদফতরের একের পর এক অভিযানের কারণে প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই কার্যক্রম বন্ধ করে নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়। এর মধ্যে আবারও অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। তবে কী কারণে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, এ বিষয়ে অভিযানে থাকা কোনও কর্মকর্তা সেদিন কথা বলেননি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির পরিচালক খন্দকার আশফাক অভিযোগ করেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধভাবে ‘বন্ধ থাকা’ ক্লিনিকে পরিদর্শনের নামে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মার্কিন ভিসাধারীদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের কয়েকজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা অবাদ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে এরকম কয়েকজনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ তদন্তের ভিত্তিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাদের ভিসা বাতিল করেছে সে সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ না করলেও এ ধরনের তথ্য সরকারের কাছে আছে বলেই সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরও এধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে এরকম আশঙ্কা থেকে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, যাদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আছে বা তাদের সন্তান-সন্ততি বা পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে বা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের কোন ধরনের বৈষয়িক সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে এমন কোন দায়িত্বে রাখবে না। এই সমস্ত দায়িত্বে যদি এখন কেউ থেকে থাকে তাদের সেখান থেকে গুটিয়ে নেওয়া হবে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসনের মধ্যে যারাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদেরকে গুটিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। 

সরকার মনে করছে যে, নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করে মাঠ প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ভেঙে ফেলতে চাইবে এবং একটি নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইবে। এটি যেন না করতে পারে সেই জন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং মাঠ প্রশাসনের মধ্যে যাচাই বাছাই শুরু হয়েছে। 

মূলত পাঁচটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বৈশিষ্ট্য গুলো যে সমস্ত কর্মকর্তার মধ্যে থাকবে তাদেরকে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো দায়িত্বে রাখা হবে না। যে পাঁচটি বৈশিষ্ট্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে;

১. মার্কিন ভিসা রয়েছে। 
২. পরিবারের কোনো সদস্য বা সন্তান-সন্ততি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে। 
৩. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নিকট ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজন থাকে এবং ওই ব্যক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত যাতায়াত করেন।
৪. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ রয়েছে বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন সরকারি কর্মকর্তারা।
৫. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী আ আবেদন করেছেন এরকম ব্যক্তিবর্গরা। 

সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এরকম কর্মকর্তার সংখ্যা এক থেকে দুই শতাংশের বেশি না। এর বাইরে বিপুল সংখ্যক  কর্মকর্তা রয়েছেন যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কখনোই যান না বা যাওয়ার প্রয়োজনও মনে করেন না। সরকার তার নিজস্ব উদ্যোগে জনপ্রশাসনের মাধ্যমে একটি জরিপ পরিচালনা করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, মাত্র এক থেকে মাত্র দুই শতাংশ সরকারি কর্মকর্তা তাদের চাকরি জীবনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান বা সেখানে তাদের সন্তান-সন্ততিরা পড়াশোনা করেন। এখন যারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পালন করছেন তাদের মধ্যে যাদের সন্তান-সন্ততিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছে বা যারা নিয়মিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত করেন তাদের ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।

নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারে এরকম ব্যক্তিরা নির্বাচনকালীন সময়ে একটু দূরত্বে থাকবেন। এমন সব ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনকালীন সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখা হবে যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই।

মার্কিন ভিসা   সরকারি কর্মকর্তা   জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়   আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী   ভিসা নীতি   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গণমাধ্যমকেও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার কথা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ০৭:৫৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

সরকারি দল, বিরোধীদল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) একটি বেসরকারি চ্যানেলে এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুক্রবার থেকে পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে জানানো হয়, এসব ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত হলে ভবিষ্যতে অন্যদের ওপরও এ নীতির অধীনে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলো শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী যারা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত ২৪ মে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়তার লক্ষ্যে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেন।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার অর্থ হলো— ভোট কারচুপি, ভোটারকে ভয়ভীতি দেখানো, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দান, রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ, মিডিয়াকে মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া। এসব কর্মকাণ্ডের জন্যও ভিসানীতির প্রয়োগ হতে পারে।

ভিসা নীতি   গণমাধ্যম   পিটার ডি হাস   মার্কিন রাষ্ট্রদূত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কি বিরোধে জড়াল?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ভারতের সঙ্গে কানাডার এখন বিরোধ প্রকাশ্যে। আর এই বিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু ভারত পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখন্ড ভারতের প্রশ্নে তারা কাউকেই ছাড় দেবে না। কানাডার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি প্রতিদিনই নিত্য নতুন মাত্রা নিচ্ছে। একই রকম ইস্যুতেও কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের হতে যাচ্ছে? কূটনীতি অঙ্গনে এই প্রশ্নটি এখন ক্রমশ বড় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কয়েকজনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

সাধারণত এই উপমহাদেশের রাজনৈতিক বিষয়াদি এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গতি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার স্বাতন্ত্র অবস্থান সৃষ্টি করেছে। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ ইস্যুতে পুরোপুরি বিপরীত মেরুতে অবস্থান গ্রহণ করেছে বলেও কূটনৈতিকরা মনে করছেন। আর এই মতবিরোধ কমানোর লক্ষ্যে ভারতের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি  মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে যে বৈঠক করেছিলেন সেখানে বাংলাদেশের ইস্যুটিকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন বলেও একাধিক কূটনৈতিক সূত্র দাবি করেছে। ওই বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জি-টুয়েন্টি সন্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসেন এবং সেখানেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকেও বাংলাদেশ ইস্যুটি  আলোচনায় এসেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করা হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব কি সে সম্পর্কে ভারত প্রকাশ্যে না বললেও ভারতের কূটনীতিকরা আশাবাদী ছিলেন যে শেষ পর্যন্ত তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে সক্ষম হবেন। কিন্তু নতুন ভিসানীতির পর মনে করা হচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত বোঝাতে পারেনি বা ভারত যে প্রস্তাব দিয়েছে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানেনি। এটির ফলে এই অঞ্চলে ভারতের একটা আধিপত্য এবং নিয়ন্ত্রণ ক্ষুন্ন হতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন কূটনৈতিকরা। বিশেষ করে পাকিস্তানে ইমরান খানকে হটানোর পর তার নিয়ন্ত্রণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে। এখন যে সরকার ক্ষমতায় আছে এবং সেনাবাহিনী পুরোপুরি ভাবে মার্কিন নিয়ন্ত্রণে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরামর্শেই পাকিস্তান গোপনে ইউক্রেনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে এমন খবর মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই অস্ত্র বিক্রির পুরস্কার হিসেবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে আইএমএফ এর ঋণ পাইয়ে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশেও যদি পাকিস্তানের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অনুগত সরকার বসায় তাহলে ভারতের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে বলে ভারত মনে করছে। বিশেষ করে এ ধরনের অনির্বাচিত অগণতান্ত্রিক সরকার বা অন্য কোনো সরকার ক্ষমতায় এলে আবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাপট শুরু হবে। বিশেষ করে সেভেন সিস্টার অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে ভারত মনে করে। যে কারণে স্বাধীন খালিস্তান ইস্যু নিয়ে ভারত সোচ্চার। কানাডার সঙ্গে এ নিয়ে কঠোর অবস্থানে গেছে। ঠিক একই কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বাংলাদেশের ইস্যুতে ভারত কঠোর অবস্থানে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ  বাংলাদেশ কৌশলগত কারণে ভারতের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে যদি আবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি হয়, আবার যদি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা শুরু করে তাহলে সেটি ভারতের জন্য হবে একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা। এই অবস্থা ভারত কখনোই  বরদাস্ত করবে না। 

ভারত মনে করে যে, বর্তমান সরকার থাকার কারণেই গত পনেরো বছর ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা চুপসে গেছে। এখন তারা  একেবারেই আগের অবস্থানে নেই। এরকম প্রেক্ষাপটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে তাহলে ভারত প্রকাশ্যে মার্কিন বিরোধিতা করতে পারে যেমনটি তারা করেছে কানাডার সাথে।

বাংলাদেশের নির্বাচন   কানাডা   ভারত   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন