জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমার বর্তমানে একটি ফুটন্ত অগ্নিকুন্ডে পরিণত হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রীতিমতো কোনঠাসা হয়ে পড়েছে সেনাবাহিনী। এতেই যেন মাথা নষ্ট অবস্থা জান্তা সরকারের। এমন শঙ্কায় সেনাবাহিনীকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জান্তা সরকার নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিদ্রোহীদের উপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। বিমান হামলা করে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। সাধারণ জনগণও প্রাণ ভয়ে যে যেভাবে পারছে ছুটছে সীমান্তের দিকে। যেন ফিরে এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের মতোই আরেকটা রোহিঙ্গা নিধন মিশন।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় (ইউএনওসিএইচএ) অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৩ নভেম্বর রাথেদাউং শহরে আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা মংডু, কিয়াউকতাও, মিনবিয়া, পাউকতাও, পোন্নাগিউন এবং পালেতওয়া শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। আর ওই যুদ্ধের ফলে ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানে থাকা বেসামরিক ব্যক্তিদের জীবনও হুমকির মুখে পড়েছে।
নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া পাউকতাও শহরের বাসিন্দা সাবেক এক সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএনএন-কে জানিয়েছেন, তিনি শহরের থাকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না এবং সেখানে কী ঘটছে তা জানেন না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গেল কয়েক দিনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। প্রাণ ভয়ে কিছু সেনা সদস্যও পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ভারত এবং চীন সীমান্তে। জান্তা বাহিনীর এমন কাণ্ডে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে নয়াদিল্লি।
রয়টার্সে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে সেনাবাহিনীর কিছু ক্যাম্প জালিয়ে দিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন রাজ্যে। পরিস্থিতি অনেকটা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী শঙ্কা করছে, তাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালাতে পারে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এরই মধ্যে বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর সব ক্যাম্প জালিয়ে দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদিরা।
গত কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর লড়াই চলছে। তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দেশটির জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে নজিরবিহীন সমন্বয় তৈরি করে দিয়েছে। যার ফলে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
অঞ্চলটির বিদ্রোহীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে রক্ষা পেতে আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী এক হয়ে যুদ্ধে নেমেছে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে স্বেচ্ছায় তরুণতা স্বাধীনতাকামী সংগঠনগুলোতে যোগ দিচ্ছে। নিচ্ছে প্রশিক্ষণও। তারাই রুখে দাঁড়াচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে।
২০২১ সাল থেকে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে জান্তা সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে। সে সময় সেনা শাসনের প্রতিবাদে তখন রাস্তায় নামে হাজার হাজার মানুষ।
মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা জাতিগত বিদ্বেষের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় । এ সময় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাশেশে আশ্রয় গ্রহন করে। ৬ বছর পরও তাদের ফেরত পাঠানো যায়নি নিজ দেশে।
জান্তা সরকার মিয়ানমার সেনাবাহিনী জাতিসংঘ আরাকান আর্মি কায়াহ রাজ্যে
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৬ মাসের ও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হাসামকে পুরোপুরি নির্মূলের বার্তা দিয়ে আসছে ইসরায়েল। কিন্তু দীর্ঘ সময় যুদ্ধের পরেও নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন ইসরায়েলি সেনারা।
সম্প্রতি আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েলের ৩০ সেনা নিজেদের দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। প্যারাট্রুপার ইউনিটের সেনারা বলছেন, রাফাহ সীমান্তে অভিযানের জন্য ডাকা হলে তারা এতে সাড়া দেবেন না।
বর্তমানে গাজার সর্বশেষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল হচ্ছে মিসরের রাফাহ সীমান্ত। এলাকাটিতে ইসরায়েল অভিযানের পরিকল্পনা করছে। এমন সময় দেশটির সেনারা এ মনোভাব জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব রিজার্ভ সেনাদের দায়িত্বে ফেরাতে জোর করবেন না কমান্ডাররা। দীর্ঘ এ যুদ্ধে সেনারা কতটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই বার্তায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা করে। এতে ১ হাজার ২০০ এর বেশি নিহত হয়। হামাস যোদ্ধারা ধরে নিয়ে যায় কয়েকশ ইসরায়েলিকে। এরপর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নৃশংস আক্রমণ শুরু করে। সর্বাত্মক সামরিক অভিযানে তেলআবিব কোনো মানবিক নিয়ম মানছে না। নির্বিচারে নারী ও শিশুসহ বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোয় কয়েক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের টানা বিক্ষোভ চলছে। আটক করা হয়েছে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে। এতেও তাঁদের দমানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ক্যাম্পাসগুলোয় চলমান বিক্ষোভ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে।
১৯৬০–এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পর যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইসরায়েলবিরোধী এই আন্দোলন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সেই বিক্ষোভে ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছেন, তাঁদের এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিক্ষোভকে তাদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত বলে মনে করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশের হাতে শিক্ষার্থীদের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।
সর্বশেষ গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের অভিযোগে ১০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
নিউইয়র্কের ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কের ওপরে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের বিশেষ বাহিনী স্ট্র্যাটেজিক রেসপন্স গ্রুপকে (এসআরজি) ড্রোন নিয়ে সতর্ক টহল দিতে দেখা যায়।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘ইসরায়েলের বোমা, অর্থ দিচ্ছে এনওয়াইইউ, আজ কত শিশু হত্যা করেছ’, এমন প্রচারপত্র বিলির সময় ১২০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৯০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শিক্ষার্থী বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্র জর্জ ওয়াশিংটন ফিলিস্তিন
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে টাবু টাঙিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের এ বিক্ষোভ বন্ধে আল্টিমেটাম জারি করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম প্রত্যাখান করায় শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে প্রশাসন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভে থেকে সড়ে আসার আল্টিমেটাম দেয় প্রশাসন। এতে বলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিক্ষোভ থেকে সরে না আসলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
তবে সময়সীমা শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা মাস্ক এবং উজ্জল টপস পরিধান করে মানব প্রাচীর তৈরি করেছে। যাতে পুলিশ তাদের তাবু ভেঙে দিতে না পারে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে অস্টিনে অবস্থিত টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করায় বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফিলিস্তিন বিক্ষোভ শিক্ষার্থী কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
মন্তব্য করুন
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোয় কয়েক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের টানা বিক্ষোভ চলছে। আটক করা হয়েছে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে। এতেও তাঁদের দমানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ক্যাম্পাসগুলোয় চলমান বিক্ষোভ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে।