কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় যুবজোটের নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের অন্তত সাতজন কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। পুলিশের এক সদস্যও আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বুধবার যুবজোটের নেতা-কর্মীদের হামলায় ভেড়ামারা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক আহত হন। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা ভেড়ামারা শহরের ডাকবাংলার সামনে জড়ো হয়ে অভিযুক্ত যুবজোট নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ডাকবাংলার সামনে থেকে নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা দিয়ে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানের কাচারীপাড়ায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা করে আগুন দেন। এরপর তাঁরা মোস্তাফিজুরের বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালান এবং অগ্নিসংযোগ করেন। পাশে মোস্তাফিজুরের চাচা মৃত মুক্তির দোতলা বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। এরপর আরেক চাচা জানবারের রড–সিমেন্টের দোকানে হামলা করে সেখানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে শহরের রথপাড়া এলাকায় মোস্তাফিজুরের দুলাভাই রবিউল ইসলামের দোতলা বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুনে দোতলা ভবনের বিভিন্ন কক্ষে থাকা আসবাব পুড়ে যায়। রবিউলের ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন ব্যক্তি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে রবির বাড়ি কোনটা জানতে চান। এরপর বাড়ির প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান। পরে দোতলায় থাকা শতাধিক টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় নিচে থাকা ঘরের এসি বিস্ফোরিত হয়। বিভিন্ন কক্ষে থাকা আসবাব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
শহরের বামনপাড়ায় মোস্তাফিজুরের চাচা সালাউদ্দীন ও সালাউদ্দীনের ভাতিজা ইয়ামিনের পৃথক দুটি দোতলা বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইয়ামিনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এরপর হামলাকারীরা শহরের কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার আঞ্চলিক সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরাতে গেলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত সাতজন আহত হন। তাঁদের ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ভেড়ামারা শহরে সবকিছু বন্ধ ছিল। বেলা তিনটার দিকে কিছু মোটরসাইকেল চলাফেরা করতে দেখা গেছে। তবে দোকানপাট একেবারেই বন্ধ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
বেলা একটার দিকে ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমুল ইসলাম ওরফে ছানা হাতমাইকে নেতা-কর্মীদের সড়ক থেকে বাড়িতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কারা করেছে, তা জানা নেই। তবে তাঁর নেতা-কর্মীরা কোনো ঘটনা ঘটায়নি। এরপরও পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করেছে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন। তিনি ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) প্রত্যাহারের দাবি জানান।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি বলেন, ভেড়ামারা শহরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। সেগুলো নেভানো হয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। কোনো আটক নেই। পুরো শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বুধবার রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলা খাদ্যগুদাম এলাকায় পূর্ববিরোধের জেরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকসহ (৩৭) তিনজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঞ্জয়ের অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার বিকেলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। হামলার ঘটনায় শুক্রবার সঞ্জয়ের স্ত্রী বীথি রানী দে বাদী হয়ে মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৪ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি মোস্তাফিজুর বর্তমানে কারাগারে আছেন।
হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী বলেন, কয়েক দিন আগে একটা ঘটনা ঘটেছে। মামলা হয়েছে। আসামিও কারাগারে। আজ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মারা গেছেন। এরপর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভেড়ামারা শহরে তাণ্ডব চলল, যা ভেড়ামারার ইতিহাসে কখনো হয়নি। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক। সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করার দাবি জানাই।’
কুষ্টিয়া জাসদ নেতা স্বজন বাড়ি দোকান হামলা আগুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ডা. সামন্ত লাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ঢাকা-৪ ড. আওলাদ হোসেন জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার শঙ্কা থাকে। এছাড়া, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্য সরবরাহের সাপ্লাই-চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। এতে পণ্য তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় বাড়ায় রপ্তানিকারকরা কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারেন।’
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের আশঙ্কার বিষয়ে দেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দেশ দিয়েছি যাতে প্রত্যেকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখে এবং এ বিষয়ে নিজ নিজ করণীয় নির্ধারণ করে। সংঘাত দীর্ঘ হলে কোন কোন সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো সংঘাত বা সংঘাতের খবর জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করে। এতে পণ্যের জাহাজ ভাড়া বাড়ে। যা আমদানি ব্যয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সার আমদানি ব্যয়ে প্রভাব পড়ে। এতে বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, মরক্কো, তিউনেশিয়া, কানাডা, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ
মন্তব্য করুন
ভোটের বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, দিনাজপুরের হাকিমপুরে চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীকে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কামাল হোসেন ২২ হাজার ২৫১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ টেলিফোন প্রতীকে ১৯ হাজার ৩৭৮ ভোট পেয়েছেন।
সারা জীবন চাকরি করছেন। চাকরি করলেও তিনি একজন ভিশনারি সরকারি চাকুরে ছিলেন। একটা লক্ষ্যে সারা জীবন নিজেকে নিবেদিত করেছেন। একটা লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। মানবসেবাই তাঁর ব্রত। বাংলাদেশে দগ্ধ মানুষের জন্য তিনি একজন ত্রাতা এবং দগ্ধ মানুষের চিকিৎসার জন্য তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বে সমাদৃত। একজন মানবিক চিকিৎসকের প্রতিরূপ তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’