ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১ মাস পূর্তি

প্রকাশ: ০৯:৪১ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২২


Thumbnail রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১ মাস পূর্তি

মাত্রই ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে ইউক্রেনে আকাশে। আড়মোড়া ভেঙ্গে হয়তো কেউ কেউ উঠেও পড়েছেন বিছানা ছেড়ে। আর আট-দশটা দিনের মতই সেই একই রুটিনে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। কিন্তু বাসা থেকে এই বের হওয়া যে অনেক ইউক্রেনীয়র জন্য অনির্দিষ্টকালে পরিণত হবে কে বা ভেবেছিলো। ২৪শে ফেব্রুয়ারি সেই ভোরে ইউক্রেনের আকাশে শুধু যে সূর্যের আলোয় এসেছিলো তা নয়, সেই সাথে উড়ে এসেছিলো তপ্ত একরাশ গোলাও।

২০২২ সালের শুরু থেকেই রাশিয়ার সাথে ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের একপ্রকার জোর-কদমে টানাপোড়ন চলছিলো বলা চলে। যদিও এই সমস্যার গোঁড়া অনেক পুরনো। তবে নতুন বছরে তা যেন খুব বাজে ভাবে সবার সামনে ধরা দিতে শুরু করে। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রাসী সিদ্ধান্ত আর আমেরিকার টানা উস্কানি সত্ত্বেও অনেকেই ভেবেছিলেন পুতিন হয়তো ঠাণ্ডাই থাকবেন।

ন্যাটোর উস্কানির জবাবে স্বাভাবিক নিয়মে রাশিয়াও ইউক্রেন সীমান্তে ফেব্রুয়ারিতে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ সামরিক মহড়া। প্রায় দেড় লক্ষ্য সেনার এই মহড়াকে সবাই ন্যাটোকে ভয় দেখানোর একটি কৌশল মনে করলেও পুতিনের দাবার চাল যে ছিলো সবার অজানা। এমনকি রুশ বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্যই জানত না কি ঘটতে চলেছে। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি মস্কো সময় ভোর ৬টায় ইউক্রেনে পূর্ণ দমে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার ঘোষণার কয়েক মিনিটের মাঝেই ইউক্রেনের সেই মিষ্টি ভোর যেন মৃত্যু আতঙ্কতে রূপ নিলো। মুহুর্মুহু কামানের গোলা আর মিসাইলের আঘাতে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও সীমান্ত লাগোয়া শহরগুলোর সামরিক ব্যারাক সমূহ।

পুতিনের এই অভিযানে শুরুতে কিছুটা সাফল্যর মুখও দেখতে পায় রুশ বাহিনী। অভিযানের দ্বিতীয় দিনই দখল হয় চেরনোবিল পারমাণবিক স্থাপনা। ওই দিনই রাজধানী কিয়েভের সীমান্তেও পৌঁছে যায় রুশ সেনারা। রাশিয়ার যুদ্ধের প্রাথমিক পরিকল্পনা দেখে বোঝা গিয়েছিলো যথা সম্ভব বেসামরিক প্রাণহানি এড়াতে চাইছিলেন পুতিন। আর তাইতো যুদ্ধের শুরুর সময় গুলোয় শুধু সামরিক স্থাপনাগুলোতেই রাশিয়ার মিসাইলের আঘাতের দেখা পাওয়া যায়। তবে দিন যত গড়িয়েছে রুশ বাহিনী যেন ততই খাঁদের কিনারায় পৌঁছেছে ইউক্রেনের শক্ত প্রতিরোধের সামনে। আর তাই তো যুদ্ধের শেষ এক সপ্তাহজুড়ে সামরিক স্থাপনা ছাড়াও মিসাইলের আঘাতে ধ্বংস হতে শুরু করেছে ইউক্রেনের বেসামরিক নানা স্থাপনা, গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে শহর।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে জাতিসংঘের হিসেবে এখন পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটি মানুষ। এর মধ্যে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ৩৬ লাখ। রাশিয়ার অভিযানে প্রাথমিক লক্ষ্য ছিলো কিয়েভ দখল করে ইউক্রেনের বর্তমান সরকারে পতন। শুরুতে সেটা যত সহজ মনে হয়েছিলো বাস্তবে সেটি হয়নি রুশ বাহিনীর জন্য।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় তিন হাজার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দেশটির ওপর যা রাশিয়াকে সংখ্যার হিসেবে বিশ্বের সব থেকে বেশি নিষেধাজ্ঞা জর্জরিত রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাশিয়ার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের দেওয়া অবরোধের প্রধান টার্গেট ছিলো দেশটির অর্থনীতি ধ্বংস করা। আর এতে প্রাথমিকভাবে সফলও তারা। এরই মধ্যে অবরোধের চাপে ভুগতে শুরু করেছে রাশিয়ার অর্থনীতি। রুবেলের দামে পতন আর মুদ্রাস্ফীতি মাথা চাড়া দিতে শুরু করেছে পুতিন সরকারের ওপর।

এতসব চাপের মাঝেও লক্ষ্য অর্জনে গতি আনতে বোমা বর্ষণকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। আর তাইতো মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বোমাবর্ষণের ব্যাপকতা বেড়েছে। রুশ পদাতিক বাহিনী ও নৌবাহিনী ব্যাপক বোমা ফেলছে। কেননা ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের মুখে স্থলপথে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি থমকে আছে। রাজধানী কিয়েভ থেকে উত্তর–পশ্চিমে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন রুশ সেনারা, পূর্ব দিকে এই দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার।

রাশিয়ার অভিযান নিয়ে নতুন নতুন মন্তব্যও করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার ভাষ্যমতে ‘ইউক্রেনে পুতিনের পিঠ ঠেকে গেছে।’ অন্যদিকে বাইডেনের সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবির ভাষ্য, নৈতিক জোরই শুধু হারাতে বসেননি রুশ সেনারা, তাঁদের খাদ্য ও জ্বালানিতেও টান পড়েছে।

অন্যদিকে ফরাসি এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মতে, সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। সঠিক নিশানায় হামলাও করতে পারছে না রুশ বাহিনী। তাঁর কথায়, এটা রাশিয়ার নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণনীতির সত্যিকারের ঘাটতি।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ গতকাল বুধবার বলেন, ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সত্ত্বেও পুতিনের অভিযান আটকা পড়েছে।

যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সমন্নয়হীনতায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে ব্যাপক আকারে। তবে কতসংখ্যক সেনা এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন। রুশ সেনাদের প্রাণহানির বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান উপস্থাপনা করেছে পেন্টাগন। সংস্থাটির ধারণা, রুশ অভিযানের প্রথম মাসে প্রায় সাত হাজারের মতো রুশ সেনা নিহত হয়েছে।

তবে রুশ অভিযানে কি পরিমাণ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে সে বিষয়ে ইউক্রেন সরকারের দেওয়া ভাষ্যর সাথে একমত নয় বিশেষজ্ঞরা। ইউক্রেনের সরকারের ভাষ্যমতে এখন পর্যন্ত রুশ অভিযানে প্রতিরোধে ১২ মার্চ পর্যন্ত তাদের ১ হাজার ৩০০ সেনা মারা গেছেন। অসমর্থিত সূত্র মতে এই সংখ্যাটি আরো কয়েকগুণ হতে পারে।

রাশিয়ার অভিযানে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বেশ ভালো রকমের সমর্থন পাচ্ছে দেশটির সাধারণ জনগণ থেকে। আর তাইতো সাধারণ জনগণের মনোবলে চিড় ধরাতে রুশ সেনারা আশপাশের লোকালয় অবরোধ করতে শুরু করেছে।

এই যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মাঝে চরম আকারের সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে বিমানবাহিনীর সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ার মত। আর সেই কারণে সেনাবাহিনীর নানা অভিযানে রুশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতার অভাব বেশ ভালোভাবে ভোগাচ্ছে রুশ বাহিনীকে।

ন্যাটোর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, ‘রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী যত বিপদে পড়ছে বিমানবাহিনী তত বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠছে এবং তারা যত্রতত্র তাদের ক্ষমতা ব্যবহার শুরু করেছে।’ এক্ষেত্রে কিছুটা স্থির দেখা গেছে নৌবাহিনীকে। দেশটির নৌসেনা ইউক্রেনের সাগর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বেশ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। নৌ বাহিনী একের পর এক দূর পাল্লার মিসাইল ছুঁড়ে সাহায্য করে চলেছে পদাতিক বাহিনীর অভিযানে।

শুরুতে যেভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল রুশ বাহিনীর দখলে গেছে তা দখলে রাখা কিংবা আরো সামনে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে ব্যাপক প্রতিরোধে পড়েছ রুশ বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মাঝে এখন পর্যন্ত শুধু মাত্র ইউক্রেনের দক্ষিণে অবস্থিত খেরসন দখল করতে সক্ষম হয়েছে রাশিয়া। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতেই রাজধানী কিয়েভের মুখে পৌঁছে গেলেও শক্ত প্রতিরোধে রাজধানীর ভেতর এখন নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পারেনি মস্কো। এছাড়া বন্দর নগরী মারিউপোল রুশ বাহিনী অবরুদ্ধ করে রাখলেও দখল নিতে সক্ষম হয়নি দেশটি। মিকোলাইভে নিয়মিত আকারে গোলা ও মিসাইল ছুড়ছে সেনাবাহিনী। উত্তরাঞ্চলীয় শহর খারকিভের দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে ঘেরাও করে শহরটিতে এগোনোর চেষ্টা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। দখল নিতে নিয়মিত বোমা হামলাও করছে তারা।

এত ঘটনা মাঝেও দুই দেশের মধ্য আলোচনাও শুরু হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা এখন পর্যন্ত চারবার নিজেদের মাঝে বৈঠক করেছে। যদিও বৈঠকগুলো থেকে তেমন কিছুই অগ্রগতি হয়নি তবে এই বৈঠকের ফলে আলোচনার দোয়ার উন্মোচিত হয়েছে।

অন্যদিকে তুরস্কের সহযোগিতায় ইউক্রেন ও রাশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বসে। তুরস্কে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুলেভ নিজেদের মাঝে যুদ্ধ বন্ধ বিষয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকেও বলার মত তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি তবে দেশ দুটির মাঝে সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠক যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ববাসীর কাছে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখিয়েছে।

তবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে এখনো রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে। রাশিয়ার ভাষ্য যুদ্ধ বন্ধে অবশ্যই ইউক্রেনকে দেওয়া রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি গুলো পূর্ণ করতে হবে অন্যথায় অভিযান চলতে থাকবে। অন্যদিকে রাশিয়া আরো অভিযোগ করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় ইউক্রেন রাশিয়ার দেওয়া শর্তগুলো পূরণ করছে না। তবে ইউক্রেন এই যুদ্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে সরাসরি দায়ী করে চলেছে।

পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না নেওয়া পর্যন্ত হয়তো ক্ষান্ত হবে না। তবে দেশটির এই অভিযানের ফলে যেমন আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির স্বীকার হয়েছে তেমনি এটি এখন দেশটির জন্য সম্মানের বিষয় হয়েও দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া যদি চলমান শান্তি প্রক্রিয়ায় অস্ত্রবিরতিতে রাজিও হয়, তবে তা হবে রুশ বাহিনীকে আবারো সুগঠিত করা এবং নিজেদের জন্য আরো বেশি সময় বের করা। কারণ রাশিয়া এই যুদ্ধে নিজেদের শক্তি ক্ষয়ের এক দুষ্ট চক্রে পতিত হয়েছে। এই চক্র কাটিয়ে উঠতে রাশিয়ার এখন একটা দম নেওয়ার জায়গা প্রয়োজন। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের পরের পর্ব হয়তো ইউক্রেনবাসীর জন্য আরো ভয়ের হয়ে উঠবে। রুশ বাহিনী নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে আরো বেশি বেসামরিক লক্ষে আঘাত হানবে তারা হয়তো তাদের যুদ্ধ কৌশলের ঘাটতি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে ঢাকার চেষ্টা চালাবে।

রাশিয়া   ইউক্রেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রা উঠল ৪৫.৮ ডিগ্রিতে

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুন্ডায় শনিবার সবচেয়ে বেশি গরম ছিল। আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের কলাইকুন্ডায় দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।  

শনিবার দক্ষিণবঙ্গের মাত্র চার জায়গায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির নিচে। বাকি সব এলাকায় পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে চলেছে তাপপ্রবাহ। শনিবার দক্ষিণের ৯ জায়গায় হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। কলকাতাতেও দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গের মালদহেও চলেছে তাপপ্রবাহ।

 কলাইকুন্ডার পরেই তাপমাত্রার নিরিখে রাজ্যে দ্বিতীয় পানাগড়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের হিসাবে সেখানে শনিবার দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। পিছিয়ে নেই মেদিনীপুরও। সেখানে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বর্ধমান, ব্যারাকপুর, ঝাড়গ্রামেও দিনের তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। কৃষ্ণনগর, ক্যানিং, শ্রীনিকেতন, আসানসোল, পুরুলিয়া, সিউড়িতে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

উলুবেড়িয়া, ডায়মন্ড হারবার, মেদিনীপুর, ক্যানিং, কলাইকুন্ডা, বর্ধমান, পানাগড়, আসানসোল, ব্যারাকপুরে শনিবার ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের হাত থেকে বেঁচেছে দক্ষিণের মাত্র তিন জায়গা— উপকূলবর্তী দিঘা, সাগরদ্বীপ এবং বসিরহাট। তিন জায়গাতেই তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।

উত্তরবঙ্গের মালদহে শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সেখানে তাপপ্রবাহও চলেছে শনিবার। বালুরঘাটের তাপমাত্রার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। তবে উত্তরের বাকি এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। দার্জিলিংয়ে দিনের তাপমাত্রা ছিল ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের থেকে ২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। কালিম্পংয়ে ছিল ২৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আবহাওয়া অধিদপ্তর   ভারত   আলিপুর   পশ্চিমবঙ্গ   কলাইকুন্ডায়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কম্বোডিয়ায় সেনা ঘাঁটিতে বিস্ফোরণে ২০ সেনা নিহত

প্রকাশ: ০৮:৩৫ এএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কম্বোডিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে গোলাবারুদের গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন সেনা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

আল জাজিরার খবর অনুসারে, শনিবার বিকালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে একটি সামরিক ঘাঁটিতে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট। ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে হুন মানেট বলেন, আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। কম্বোডিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের কাম্পং স্পিউ প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

নিহত সেনাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে হুম মানেট বলেন, নিহতদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য অর্থ প্রদান করা হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে ধোঁয়ায় ঢাকা একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত একতলা ভবন দেখা যাচ্ছে। হতাহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেয়ার দৃশ্যও উঠে এসেছে ছবিতে। এছাড়া গ্রামের বাসিন্দারাও তাদের ঘরের ভাঙা জানালার ছবিও অনলাইনে শেয়ার করছেন।


কম্বোডিয়ায়   সেনা ঘাঁটি   বিস্ফোরণ   নিহত ২০  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হিজবুল্লাহর হামলা

প্রকাশ: ০৮:২১ এএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উত্তরাঞ্চলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা লেবানন থেকে আসা একটি ‘সন্দেহজনক আকাশযান’ গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এই আকাশযান (ড্রোন) উত্তর ইসরায়েলের মানারা এলাকার দিকে যাচ্ছিল।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ড্রোন এবং গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বেসামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলায় তাদের দুই সদস্যসহ তিনজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে তারা এই হামলা চালিয়েছে।

এক বিবৃতিতে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা আল মানারা সামরিক কমান্ডের সদর দফতর এবং গোলানি ব্রিগেডের ৫১তম ব্যাটালিয়নের বাহিনীকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ড্রোন ও গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে একটি কঠিন হামলা চালিয়েছে।

৭ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ ও দক্ষিণ লেবাননে তাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়মিতভাবেই ইসরায়েলের গোলা বিনিময় চলছে। ধাপে ধাপে পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতাও বাড়ছে।

এদিকে হামাসের সামরিক শাখা দুইজন ইসরায়েলি বন্দীর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে জিম্মি ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের কাছে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে তাদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছে। তারা গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ নিয়েও সতর্ক করেছে।


ইসরায়েল   উত্তরাঞ্চল   হিজবুল্লাহ   হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে হামাস

প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কাতার ও মিশরের মাধ্যমে হামাসের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসরায়েল। হামাস জানিয়েছে, এ প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে তারা। এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে।

শনিবার ( ২৭ এপ্রিল ) ইসরায়েলের যুদ্ধিবিরতির প্রস্তাব প্রসঙ্গে হামাসের উপপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, ‘ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি আমাদের কাছে পৌঁছেছে। গত ১৩ এপ্রিল তারা কাতার ও মিশরের মাধ্যমে এ প্রস্তাবটি পাঠিয়েছে। আমরা প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখছি ও পর্যালোচনা করছি। পর্যালোচনা শেষে আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরব।’

এর আগে গত ১৩ এপ্রিলেই হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জিম্মি মুক্তির শর্তে তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায়। কিন্তু ইসরায়েল তখন রাজি হয়নি।

এখন আবার নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হয়েছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে এরই মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন মিশরের একটি প্রতিনিধিদল। এ সংক্রান্ত আলোচনা করতে সৌদি আরবে গেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনসহ বিভিন্ন দেশের নেতা সেখানে যাচ্ছেন। সেখানেও গাজা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মহল থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জোরালো হচ্ছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে গাজা। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি না হলে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষ শুরু হবে।
এদিকে গাজায় এখনো হামলা অব্যাহত রেখে ইসরায়েল। গত শুক্র ও শনিবারেও রাফাহ এলাকায় হামলা চালিয়েছে তারা। রাফাহর একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমার মা, বাবা, আমার মেয়ে, দুই ছেলে—সবাই মরা গেছে। এই দুনিয়ায় আমার আর কেউ নেই। ওরা (ইসরায়েলি বাহিনী) আমার বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।’

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, রাফাহ এলাকার মানবিক সংকট ইতিমধ্যেই গুরুতর। এর মধ্যে সেখানে ইসরায়েল অভিযান চালালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

তবে ইসরায়েল সেখানে নির্বিচার অভিযান চালানোর ব্যাপারে এখনো অটল। গতকাল থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৩২ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এ নিয়ে গত ছয় মাসের যুদ্ধে ৩৪ হাজার ৩৮৮ জন ফিলিস্তিনি মারা গেলেন।



ইসরায়েল   প্রস্তাব   হামাস  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন আত্মহত্যা করতে গেছেন বাইডেন?

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জীবনে আত্মহত্যা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেকেই হয়েছেন হতাশা, ব্যর্থতা কিংবা গ্লানির তিক্ততায়ও আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এমন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকটা নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। যা অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার।

জো বাইডেন ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম নিয়েছেন। শুরুতে আইনজীবী হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল নেইলিয়া হান্টার। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল জোসেফ, রবার্ট হান্টার এবং নাওমি ক্রিস্টিনা অ্যামি।

এরপর ১৯৭২ সালে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাইডেনের স্ত্রী এবং কন্যা নিহত হন। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে বিউ এবং হান্টারও ছিলেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় বেঁচে যান তারা। কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনই সবচেয়ে কম বয়সে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়েন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেট সদস্য হন তিনি।

তবে পৃথিবীর অন্য অনেক সাধারণ মানুষের মতো জো বাইডেনও ওই সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। সম্প্রতি বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হাওয়ার্ড স্টার্নকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই।

বাইডেন বলেন, তার প্রথম স্ত্রী নিহত হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সারাক্ষণ বিষণ্ন থাকতেন। এক রাতে মদ্যপ অবস্থায় তার মনে হয়েছিল এই জীবনের কোনো অর্থ নেই। এ কথা মনে হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ডেলাওয়্যার মেমোরিয়াল ব্রিজের উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়েন বাইডেন। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চান।

‘কিন্তু ব্রিজে পৌঁছানোর পর হঠাৎ তার মনে হলো, তার আরও দুটি ছোট সন্তান আছে। যদি তিনি আত্মহত্যা করেন, তাহলে তাদের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠামাত্র বাইডেন গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন। ফিরে আসেন বাড়িতে। এরপর ১৯৭৮ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম হয় জিল বাইডেন।

বাইডেন বলেন, ‘আসলে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন তার আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে। কিন্তু ওই সময়টায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং বলতে হয়, আত্মহত্যা হলো সবচেয়ে বোকামি কাজ।

সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দুই ছেলে বিউ এবং হান্টারকে একাই বড় করেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেটর হিসেবে রাজনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন।


জো বাইডেন   আত্মহত্যা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন